
♣
আমি এখন
আমি এখন জল ছুঁই ছুঁই মেঘের ভেলা
দিন রজনীর গল্পে লিখি কাব্যের মেলা,
যায়না ছোঁয়া যায়না ধরা কেমন একটু
এই হেলা
কেমন করা মন উদাসি আঁধার আলোর
এই খেলা।
আঁধার সন্ধ্যায় ঘনায় বিজলি,
বাতাস ওঠে তর্জনে,
গর্জনে তার কাঁপছে হৃদয়
মন খারাপের বর্ষণে।
আমার আসা আমার যাওয়া
মনের সুঁতোর মন টানে,
তোমায় লিখি কাব্যতে আজ মন বোঝে সে
কয়জনে!
এই শহরের মধ্যরাতে নগ্ন পায়ে কে যায় ওই
কেবা রাখে বেদন ঘড়ির সময় ফুরায় কখন সই!
কে দেখেছে কোন বধুয়ার ছিন্ন মনের কান্নারে
কে জেগেছে জনম ভরে মরুপ্রান্তর কান্তারে।
আমার সকল আরধানা, আমার ভালোবাসারে
জালাঞ্জলি দিয়েছি আজি ভীষণ দহন মনটারে।
বৃষ্টি যদি আবার আসে,দুঃখগুলো মেঘ গলে
জীবন যেথা পড়ছে ঝরে,ঝরঝর ওই বর্ষণে।
মেঘের নিনাদ,
আসছে কানে জীবনের এই আকাশে
বাজছে প্রলয় হাঁকছে যে হাক
নিত্য দিনের ঝঞ্ঝাটে।
তবু আমি দিবো পাড়ি প্রলয় সাগর ঝঞ্ঝাবাত
গুড়িয়ে দিবো ভেঙ্গেচুরে,
অত্যাচারীর কালো হাত।
মেঘের পালক চাঁদের নোলক
নেই পরিবার সময় আর,
পার হতে হবে ঝঞ্ঝা তুফান
লঙ্ঘিতে হবে দুরের পথ
যে পথের শেষে মিলবো মোরা
মধুর মিলন সংগীতে,
পার হবো মোরা লক্ষ বাঁধা
জীবনের রঙ্গে রাঙ্গিতে।
♣
চেতনায় একুশ
একুশ তুমি আছো চেতনার অতলের গহীনে
মনের শব্দেজুড়ে সাঁজানো কবিতা হয়ে
তুমি লাখো শহিদের হৃদয়ের অহংকারে শোভিত রক্তলালে,
রয়েছো চিরো অম্লান মথিত মমনে
গভীর হৃদয়ের শত ভালোবাসা আর
শত কাহিনি ভরে।
একুশ তুমি চেতনার বলিদানে
একুশ তুমি ধান শালিকের গানে
রয়েছো আজো চিরো অবিনাশি বংলার প্রাণে,
রয়েছো বধুয়ার রঙ্গিন অভিমানে।
একুশ তুমি সালাম বরকত রফিক জব্বার এর
কবরে,
জুড়ে আছো গভীর চেতনায় নোঙ্গর ফেলে।
আছো এই ভাষার আঁখরে চিরো উন্নত হয়ে
চেতনার ফলিত সম্ভারে,
আকাশে ভাসা নীলাময়ী মেঘ হয়ে
প্রেমের বারি ঝরে।
একুশ তুমি বাঙ্গালি জাতীর মান
একুশ তুমি এই বাংলার সুশোভিত পথে পথে
রয়েছো ফুলে ফলে,
এই বাংলার শত শত মনের ছাঁয়ে,
রয়েছো এই বাংলার নদীমাঠ কাঁদা মাটি জলে মিশে
রয়েছো আকাশে বাতাসে মহুয়া ভরা গাঁয়ে।
একুশ তুমি ছেলে হারা মায়ের বিলাপ বেহাগী গান
একুশ তুমি বাংলার সম্মান,
একুশ তুমি আছো আজো রয়ে গেছো
বেদনার নীলাচল জুড়ে,
আছো আম্রমুকুলে মুকুলে
আছো ফাগুনের বনে আগুন পলাশফুলে।
আছো বিজনে বিজনে ফুলের দোলে দোলে
আছো বাংলা মায়ের আচল বিছানো কোলে।
একুশ তুমি চেতনায়,তুমি বেদনার শতমূলে
আছো তুমি প্রিয় বাংলার সবুজ বেলাভূমি জুড়ে।
♣
বসন্ত এবং বিদ্রোহের গল্প
একদিন বসন্তলগ্নে বিদ্রোহের সূচনা সংগীত শুনেছি,
আজো শুনি তার প্রতিধ্বনি।
ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে সেই সংগীত ফিরে এসেছে আজ আবার আমার কর্ণকুহরে!
তুমি বুকের পাঁজরে তোমার প্রেম মথিত করে দিয়েছিলে একদিন,
দিয়েছিলে ভালোবাসার জ্যোতির্ময় আলো আমার চোখের গভীরে গেঁথে।
তোমার ঠোঁটে সেদিন বেজেছিলো প্রেমের মোহন বাঁশি,
চোখে ছিলো সাগরের ফেনায়িত তরঙ্গ; আকাশের রবি শশীরা দেখেছিলো তোমার প্রেমের দিশেহারা আর্তি।
তোমার সুনিপুণ হৃদয় সেদিন কোমল রোদের মতন উষ্ণ হাসি হেসেছিলো;
তপ্তমরুর বুকে সেদিনও ছিলো জ্বালাময় বহ্নিশিখা,
অথচ তুমিই সেদিন নিভিয়ে দিয়েছিলে সবটুকু বেদনার বেহাগ!
আর আজ তুমি বিদ্রোহের বুকে শানিত তলোয়ারের ফলা।
হ্যা আজ ফাগুনের কাছে এসেছে বিদ্রোহের আগুন,
তুমি ফাগুনের বনে আগুন ঢেলেছো প্রিয়তু,
আমি তাই আজ হয়ে গেছি আগ্নেয়গিরি!
আমি ফাগুন কে আজ আঙ্গুরীয় করেছি আঙ্গুলে তব,
আর এক হাতে প্রেমকে করেছি বিদ্রোহের শানিত তলোয়ার সম!
এখন আমার আর নেই ভয় ফাগুন হারাবার,
নেই আর ভয় তোমায় হারাবার।
কারন তোমায় আমি বিশাল করেছি হৃদয়ে আমার
আমি তাই নিজষ কালো আঁধারের অলিন্দে
পথ চলতে পারি নির্দ্বিধায়!
আমি ভালোবাসায় এখন বিদ্রোহের ঝড় তুলেছি
বসন্তকে করেছি চিরোতরে বিদায়!
হে আমার চিরো বিদ্রোহী প্রিয়,
ভালোবাসার বসন্ত আজ হয়ে গেছে বিগ্রহ।
আমার বসন্তকাব্যে আজ ধুসরতা নেমেছে,
আমি এঁকেছি তোমায়,বিদ্রোহের লালিমা লাভায়।