০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিলো হাজার হাজার মানুষ

  • আপডেট সময়: ০৭:২৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • 9

হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সময়ে নেয়া পদক্ষেপগুলোর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

‘৫০৫০১’ নামে পরিচিত এই বিক্ষোভের অর্থ হলো ‘৫০ রাজ্যে ৫০ বিক্ষোভ, এক আন্দোলন’।

আয়োজকরা আমেরিকান রিভল্যুশনারি ওয়ার বা আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর ২৫০ তম বার্ষিকীর সাথে মিলিয়ে এই বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের সামনে ছাড়াও টেসলা ডিলারশিপের সামনে এবং বহু শহরের কেন্দ্রে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তাদের অনেকে ভুলবশতঃ এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো কিলমার আবরেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত আনার আহবান জানান।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রতিবাদ সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে গত এপ্রিলে ট্রাম্পবিরোধী ‘হ্যান্ডস অফ’ বিক্ষোভে বিশাল পরিমাণে মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।

জনমত জরিপগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে।

শনিবারের বিক্ষোভে ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ তুলে ধরে বিক্ষোভ করেন আন্দােলনকারীরা। এর মধ্যে সরকারি চাকরি কাটছাঁট ও অন্য খরচ কমানোর মতো সরকারি দক্ষতা বিষয়ক বিভাগের নেয়া পদক্ষেপও আছে।

ছবির উৎস,Reuters

নিউইয়র্কে বিক্ষোভের দৃশ্য

 

এছাড়া এল সালভাদরের আবেরগো গার্সিয়াকে ফেরত আনার বিষয়ে প্রশাসনের অনিচ্ছার বিষয়টিকেও এই বিক্ষোভে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গিহাদ এলজেন্ডি সিএনএনকে বলেছেন, তিনি গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের সমালোচনা করতে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

তার বিশ্বাস মি. ট্রাম্প সহজেই তাকে ফিরিয়ে আনতে চাপ দিতে পারেন।

পুরো প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিলো শান্তিপূর্ণ। যদিও ডেমোক্র্যাট দলের সুহাস সুব্রামানিয়াম সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে ট্রাম্পের সাইন সহ একজন ব্যক্তিকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গেছে।

অনেকে প্রতিবাদকারী ‘নো কিংস’ মানে ‘কোন রাজা নয়’ এমন সাইন বহন করেছেন।

এটি মূলতঃ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন বিপ্লবের বার্ষিকীর প্রতি সমর্থন।

ম্যাসাচুসেটস-এ এই বার্ষিকী উদযাপনের সময় লেক্সিনটন ও কনকর্ডের যুদ্ধকে স্মরণ করা হয়েছে।

৫০৫০১ বিক্ষোভ হয়েছে বোস্টনেও।

“আমেরিকায় স্বাধীনতার জন্য এটা একটা বিপদজনক সময়,” থমাস ব্যাসফোর্ড বলছিলেন এপিকে। তিনি তার পার্টনার, কন্যা ও দুই নাতিকে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

ছবির উৎস,Getty Images

প্লাকার্ড হাতে একজন বিক্ষোভকারী

ছবির উৎস,Reuters

বহু মানুষ অংশ নিয়েছে এই বিক্ষোভে

 

“আমি চেয়েছি যে ছেলেরা আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানুক যে একটা সময় তারা মুক্তির জন্য লড়াই করেছি”।

গ্যালাপের সবচেয়ে সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৪৫ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পের মেয়াদের প্রথম চার মাসের পারফরম্যান্সকে সমর্থন করছেন।

তার প্রথম মেয়াদে এটি ছিলো ৪১ শতাংশ।

কিন্তু দেশটিতে ১৯৫২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যত প্রেসিডেন্ট ছিলেন, নিজেদের কার্যমেয়াদের প্রথম চার মাসের তাদের গড় সমর্থনের চেয়ে ট্রাম্পের প্রথম চার মাসের জনসমর্থন অনেক কম।

বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্পের জনসমর্থন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে অর্থনীতির প্রশ্নে।

গ্যালাপের হিসেবে, মি. ট্রাম্প এবার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন তার প্রতি সমর্থন ছিলো ৪৭ শতাংশ।

এমনকি রয়টার্স-ইপসুস এর জনমত জরিপেও প্রায় একই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে।

তাদের হিসেবে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন আছে এখন ৪৩ শতাংশের। আর অর্থনীতির প্রশ্নে এ সমর্থন ৩৭ শতাংশ।

ছবির উৎস,Getty Images

ট্রাম্পবিরোধী শ্লোগান ছিলো পোস্টারে প্লাকার্ডে

 

এর আগে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের প্রতিবাদ করে চলতি মাসেই হাজার হাজার মানুষ দেশজুড়ে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলো।

সেটি শনিবারের বিক্ষোভের চেয়ে অনেক বড় ছিলো। তখন পঞ্চাশ রাজ্যে অন্তত  বারো শ’ জায়গায় ওই কর্মসূচি পালিত হয়েছিলো।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার দু’দিন আগেও ওয়াশিংটনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলো হাজার হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী।

এ কর্মসূচির নাম ছিলো দ্য পিপলস মার্চ, যা আগে উইমেন’স মার্চ হিসেবে পরিচিত ছিল।

এটা ২০১৭ সাল থেকে নিয়মিত হয়ে আসছে।

আয়োজকরা তখন বলেছিলেন যে, তারা ‘ট্রাম্পিজম’ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন।

ট্রাম্প ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথমবারের মতো পিপলস মার্চ অনুষ্ঠিত হয়।

নারীরা তখন ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পরদিন প্রতিবাদ কর্মসূচি দিয়েছিল যাতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিলো হাজার হাজার মানুষ

আপডেট সময়: ০৭:২৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সময়ে নেয়া পদক্ষেপগুলোর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

‘৫০৫০১’ নামে পরিচিত এই বিক্ষোভের অর্থ হলো ‘৫০ রাজ্যে ৫০ বিক্ষোভ, এক আন্দোলন’।

আয়োজকরা আমেরিকান রিভল্যুশনারি ওয়ার বা আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর ২৫০ তম বার্ষিকীর সাথে মিলিয়ে এই বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের সামনে ছাড়াও টেসলা ডিলারশিপের সামনে এবং বহু শহরের কেন্দ্রে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তাদের অনেকে ভুলবশতঃ এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো কিলমার আবরেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত আনার আহবান জানান।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রতিবাদ সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে গত এপ্রিলে ট্রাম্পবিরোধী ‘হ্যান্ডস অফ’ বিক্ষোভে বিশাল পরিমাণে মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।

জনমত জরিপগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে।

শনিবারের বিক্ষোভে ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ তুলে ধরে বিক্ষোভ করেন আন্দােলনকারীরা। এর মধ্যে সরকারি চাকরি কাটছাঁট ও অন্য খরচ কমানোর মতো সরকারি দক্ষতা বিষয়ক বিভাগের নেয়া পদক্ষেপও আছে।

ছবির উৎস,Reuters

নিউইয়র্কে বিক্ষোভের দৃশ্য

 

এছাড়া এল সালভাদরের আবেরগো গার্সিয়াকে ফেরত আনার বিষয়ে প্রশাসনের অনিচ্ছার বিষয়টিকেও এই বিক্ষোভে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গিহাদ এলজেন্ডি সিএনএনকে বলেছেন, তিনি গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের সমালোচনা করতে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

তার বিশ্বাস মি. ট্রাম্প সহজেই তাকে ফিরিয়ে আনতে চাপ দিতে পারেন।

পুরো প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিলো শান্তিপূর্ণ। যদিও ডেমোক্র্যাট দলের সুহাস সুব্রামানিয়াম সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে ট্রাম্পের সাইন সহ একজন ব্যক্তিকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গেছে।

অনেকে প্রতিবাদকারী ‘নো কিংস’ মানে ‘কোন রাজা নয়’ এমন সাইন বহন করেছেন।

এটি মূলতঃ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন বিপ্লবের বার্ষিকীর প্রতি সমর্থন।

ম্যাসাচুসেটস-এ এই বার্ষিকী উদযাপনের সময় লেক্সিনটন ও কনকর্ডের যুদ্ধকে স্মরণ করা হয়েছে।

৫০৫০১ বিক্ষোভ হয়েছে বোস্টনেও।

“আমেরিকায় স্বাধীনতার জন্য এটা একটা বিপদজনক সময়,” থমাস ব্যাসফোর্ড বলছিলেন এপিকে। তিনি তার পার্টনার, কন্যা ও দুই নাতিকে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

ছবির উৎস,Getty Images

প্লাকার্ড হাতে একজন বিক্ষোভকারী

ছবির উৎস,Reuters

বহু মানুষ অংশ নিয়েছে এই বিক্ষোভে

 

“আমি চেয়েছি যে ছেলেরা আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানুক যে একটা সময় তারা মুক্তির জন্য লড়াই করেছি”।

গ্যালাপের সবচেয়ে সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৪৫ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পের মেয়াদের প্রথম চার মাসের পারফরম্যান্সকে সমর্থন করছেন।

তার প্রথম মেয়াদে এটি ছিলো ৪১ শতাংশ।

কিন্তু দেশটিতে ১৯৫২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যত প্রেসিডেন্ট ছিলেন, নিজেদের কার্যমেয়াদের প্রথম চার মাসের তাদের গড় সমর্থনের চেয়ে ট্রাম্পের প্রথম চার মাসের জনসমর্থন অনেক কম।

বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্পের জনসমর্থন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে অর্থনীতির প্রশ্নে।

গ্যালাপের হিসেবে, মি. ট্রাম্প এবার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন তার প্রতি সমর্থন ছিলো ৪৭ শতাংশ।

এমনকি রয়টার্স-ইপসুস এর জনমত জরিপেও প্রায় একই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে।

তাদের হিসেবে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন আছে এখন ৪৩ শতাংশের। আর অর্থনীতির প্রশ্নে এ সমর্থন ৩৭ শতাংশ।

ছবির উৎস,Getty Images

ট্রাম্পবিরোধী শ্লোগান ছিলো পোস্টারে প্লাকার্ডে

 

এর আগে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের প্রতিবাদ করে চলতি মাসেই হাজার হাজার মানুষ দেশজুড়ে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলো।

সেটি শনিবারের বিক্ষোভের চেয়ে অনেক বড় ছিলো। তখন পঞ্চাশ রাজ্যে অন্তত  বারো শ’ জায়গায় ওই কর্মসূচি পালিত হয়েছিলো।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার দু’দিন আগেও ওয়াশিংটনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলো হাজার হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী।

এ কর্মসূচির নাম ছিলো দ্য পিপলস মার্চ, যা আগে উইমেন’স মার্চ হিসেবে পরিচিত ছিল।

এটা ২০১৭ সাল থেকে নিয়মিত হয়ে আসছে।

আয়োজকরা তখন বলেছিলেন যে, তারা ‘ট্রাম্পিজম’ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন।

ট্রাম্প ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথমবারের মতো পিপলস মার্চ অনুষ্ঠিত হয়।

নারীরা তখন ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পরদিন প্রতিবাদ কর্মসূচি দিয়েছিল যাতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।