ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে জাতিসংঘের একটি হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নারী ও শিশুসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫০ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। খবর আনাদোলু ও আল জাজিরার।
বুধবার ভোর থেকে হওয়া হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর আল জাজিরাকে জানানোর পর রাতভর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘের একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ইসরায়েলের নিন্দা করা হয়েছে।
তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, বুধবার উত্তর গাজায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরাও রয়েছেন এবং এই হামলাকে “পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাপরাধ” বলেও অভিহিত করেছে তারা।
একটি মেডিকেল সূত্র এর আগে জানিয়েছিল, জাতিসংঘ পরিচালিত ওই ক্লিনিকে হামলায় নিহতদের মধ্যে ৯টি শিশু এবং হামলায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। মূলত জাবালিয়া শহরের বাস্তুচ্যুত শত শত বেসামরিক লোক ওই ক্লিনিকে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলার ফলে ভবনে ভয়াবহ আগুন লেগে যায় এবং এতে বেশ কয়েকজনের লাশ পুড়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার কথা স্বীকার করে দাবি করেছে, হামাস সদস্যরা ক্লিনিকের ভেতরে কাজ করছিল। এক সামরিক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, হামাসের জাবালিয়া ব্যাটালিয়ন ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য ভবনটি ব্যবহার করেছিল।
হামাস তাদের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি এসব দাবিকে “অপরাধকে ন্যায্যতা দেওয়ার লক্ষ্যে স্পষ্ট মিথ্যাচার” বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, এই অপরাধ ফ্যাসিবাদী নেতানিয়াহু সরকারের সব মানবিক এবং আন্তর্জাতিক আইন এবং নিয়মের প্রতি অবজ্ঞাকে প্রতিফলিত করে।
আরো পড়ুন:
ভারতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে হামাস জোর দিয়ে বলেছে, জাতিসংঘ পরিচালিত এই ক্লিনিকের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া সবাই বেসামরিক নাগরিক, যার মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে এবং গণহত্যা, বাস্তুচ্যুতি এবং দখলদারিত্ব বন্ধ করতে ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সংকটের রাজনৈতিক নিষ্পত্তি কার্যকর করতে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় একই ইউএনআরডব্লিউএ ক্লিনিকে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছিল।