গ্রাফিতি : রাজশাহী। ছবি: সালাহ উদ্দিন
জীবনের প্রয়োজনে কখনো কখনো বিপ্লব বা অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়ে। অভ্যুত্থান একটি ভাষা, রাগ, ক্রোধ, ক্ষোভ, গতানুগতিক ধারাকে বদলে দেওয়ার আহ্বান, যেখানে মানুষের মূল্যবোধ, খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতাও অন্যতম। যদিও অভ্যুত্থান নির্দিষ্ট কোনো একটি কারণে ঘটে না। সামাজিক ও মূল্যবোধের অবক্ষয়, মানবতা পদদলিত, অর্থনৈতিক সংকট অথবা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র, দুর্নীতির কবল ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি, অপসংস্কৃতির চর্চা রোধ, অথবা নিজস্বতা হারিয়ে বিদেশি সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করা থেকে মুক্তির যে আন্দোলন তা-ই মূলত বিপ্লব বা অভ্যুত্থান।
পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া সব অভ্যুত্থানের চরিত্র একই রকম হয়নি। হওয়ার কথাও না। রুশ বিপ্লব হচ্ছে বলশেভিক বিপ্লব ও অক্টোবর বিপ্লবের সমন্বিত রূপ, যা ছিল সত্যিকার অর্থেই অনিবার্য। আবার কিয়েভের রাজপথে ছিল অরেঞ্জ বিপ্লব।
ফলে দেশটিতে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় দেশটির মহাব্যবস্থাপক। সেই আন্দোলন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে আরববিশ্বে। শুরু হয় আরব বসন্ত, যা ছিল শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে প্রান্তিক জনগণের গণবিক্ষোভ। ২০১০ সালের শুরু থেকে আরববিশ্বের বিভিন্ন দেশে বয়ে যাওয়া গণবিপ্লবের ঝড়কে পৃথিবীবিখ্যাত সাংবাদিকরা আরব বসন্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
গণবিক্ষোভের শুরু তিউনিশিয়ায় হলেও পর্যায়ক্রমে তা মিসর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেকবারই এমন গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে। এর মধ্যে অন্যতম অ্যাডলফ হিটলার, জোসেফ স্তালিন, বেনিতো মুসোলিনী, ফ্রাঁসোয়া দুভেলিয়ে, অগুস্তো পিনোশে, জাইন এল আবিদিন বেন আলী, গোতাবায়া রাজাপক্ষে, সর্বশেষ সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ, যারা জনগণের শক্তি ও সাহসের সামনে টিকতে পারেনি। ফলে শাসকরা পালাতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের গত শতকের নব্বইয়ের দশকের স্বৈরাচার ও সামরিক শাসকের বিরুদ্ধেও অভ্যুত্থান হয়েছিল, যে অভ্যুত্থানে শাসনক্ষমতা থেকে চ্যুত হয়েছিল শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। না, বাংলার ইতিহাসের পাতায় এরশাদ একমাত্র স্বৈরশাসক শাসক ছিল না। ঘৃণার এই তালিকা সমৃদ্ধ করতে শাসক শেখ হাসিনাও স্বৈরশাসক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছিল। আর তাই ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই পুরো ক্যাবিনেট নিয়ে তাদের পালাতে বাধ্য করে গণ-অভ্যুত্থানকারীরা!
স্বৈরতন্ত্র চলমান থাকলে সাধারণের মধ্যে একটি সংঘবদ্ধতা তৈরি হয়, যা সরকার বা পেশিশক্তির ব্যক্তিকে পরাস্ত করতে চৌকস ভূমিকা পালন করে। প্রায়ই বলি, পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ থাকলেও তীব্রভাবে ব্যক্তির সংকট রয়েছে। ব্যক্তি মানে যিনি ব্যক্ত করতে পারঙ্গম। ব্যক্ত করতে না পারলে সে সাধারণের পর্যায়ে থাকে; নিজের, পরিবারের কিংবা সমাজের কোনো ভূমিকায় নিজেকে হাজিরা থেকে বঞ্চিত রাখতে হয়। যদিও ব্যক্তি হওয়াটা সহজ কোনো ঘটনা না। আবার ব্যক্তিকে স্বত্বঃস্ফূর্তভাবে উঠতে দিলে স্বৈরশাসকের জন্য হুমকি হবে। কিন্তু ব্যক্তি তো ব্যক্ত করবেনই, নিজের মতামত জানাবেন, সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়ে বলবেন এবং ভাববেন। এমন না যে গণ-অভ্যুত্থানেই মোট ফ্যাসিবাদ দমন করা সম্ভব হয়। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বিজয়ীর ভাষাটা বড়জোর সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তার করে। অবশ্য এটাই পৃথিবীর নিয়ম। আর যখন সেই বিজয়ের ভাষা আয়ত্ত কিংবা রপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, তখনই শুরু হবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। যেহেতু এমন আশঙ্কা রয়ে যায়, ফলে ফ্যাসিবাদ সমূলে বিনাশ অসম্ভবও। তাহলে ফ্যাসিবাদ বিনাশকারীদের ভূমিকাটা কেমন হওয়া উচিত? ভূমিকাটা হওয়া উচিত ফ্যাসিস্টের ভুল নিয়ে ন্যারেশন, বয়ান, আওয়াজ, ওয়াজ বিভিন্নভাবেই চলমান রাখতে হয়। কারণ যুদ্ধে যে দল বিজয়ী তার ভাষা সমাজে প্রভাব বিস্তার করবে, এটাই স্বাভাবিক।
জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী স্বৈরাচারের উত্খাত হয়েছে—এ কথা সন্দেহাতীতভাবে সত্য। তা কিভাবে হয়েছে জানতে চাইলে অনেকেই সরাসরি বলবে, সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের আবেগ, বিবেক, তাড়নার সমন্বয়ে স্লোগান, মাঠের লড়াই, রাজপথ দখল, নির্বিচারে গুলির কারণে রাষ্ট্রপক্ষ বেকায়দায়, ছাত্র ও জনতার বিক্ষোভ কিংবা বিদ্রোহ, বাঁধভাঙা মানুষের ঢল। হ্যাঁ, সন্দেহাতীতভাবেই এই অনুষঙ্গগুলো ছিল। কিন্তু এর পাশাপাশি কিছু উপযোগ ছিল, যা সাধারণের চোখ সুন্দরভাবে এড়িয়ে গেলেও উপযোগগুলো কোনোভাবেই এড়াতে পারেনি কেউ। তা ছিল গ্রাফিতি, কার্টুন, পোস্টার, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ।
গ্রাফিতি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : শেখ হাসান
গ্রাফিতি
জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার পরই আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসমাজ নড়েচড়ে বসে। কবিতায়, গানে, কণ্ঠে, কার্টুনে, দেয়ালচিত্র কিংবা গ্রাফিতিতে গণ-অভ্যুাত্থানকে প্রাসঙ্গিক ও বাস্তব করার জন্যই সক্রিয়ভাবে নেমে পড়ে সবাই। তেমনিভাবে স্কুল ও কলেজের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা রং আর তুলি হাতে শহরের রাজপথকে সংগ্রামীদের জন্য সহজ করে দেয়। ময়লার ভাগাড়ে এসব আঁকিয়েরা এঁকেছে বিপ্লবের ভাষা, ছবি। তবে গ্রাফিতি ছিল অন্য রকম। একদা শহরের দেয়ালগুলোতে দেখতাম—‘সুবোধ, তুই পালিয়ে যা, সময় এখন পক্ষে না’। এর সঙ্গে আবার আঁকা হলো, ‘সুবোধ, ফিরে আয়, সময় এখন আমাদের’।
গ্রাফিতির প্রভাব এতটাই ছিল আমরা দেখেছি, এ নিয়ে অন্তবর্তী সরকার একটি সংকলন করতে বাধ্য হয়; এবং সেটি জাতিসংঘের অধিবেশনে যাওয়ার সময় সঙ্গী করে, সেটি বৈশ্বিক নেতাদের হাতেও তুলে দেয়। গ্রাফিতি জুলাই বিপ্লবে অগ্রণী সৈনিকের ভূমিকা পালন করেছে এ কথা অবধারিত। সেখানে দেখা যায়, ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে শিল্পীদের আঁকা রক্তাক্ত ৩৬ জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী ক্যালেন্ডার। জুলাই সব সময়ই ৩১ দিনে হলেও জেন-জিরা জুলাই বিপ্লবকে যেকোনো উপায়ে আগস্টে নিতে অনিচ্ছুক ছিল। তাই আগস্টের ৫ তারিখ হয়ে যায় স্মরণীয় ৩৬ জুলাই। জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে আন্দোলন শুরু হলেও ৭ জুলাই ছিল ‘বাংলা ব্লকেড’। বাংলা ব্লকেড নতুন নাম, নতুন শব্দ, নতুন আওয়াজ। মানে এর ভেতরে সত্যিকারের জেন-জিদের একটি আহ্বান ছিল, আগ্রহ আর উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতোই। ১৬ তারিখ আবু সাঈদকে নির্মমভাবে হত্যা, ১৭ তারিখ পুলিশের নির্বিচারে গুলি, এভাবেই চিহৃিত করা আছে, মীর মুগ্ধর পানি হাতে ‘পানি লাগবে, পানি’, কারফিউ, সমন্বয়কদের ধরে নিয়ে যাওয়া, ৩২ জুলাই যেভাবে ৯ দফা হয়ে যায় ১ দফা, ৩৪ জুলাই শহীদ মিনারে জনতার বাঁধভাঙা উপস্থিতি, ৩৫ জুলাই লং মার্চ টু ঢাকা, যা অনিন্দ্যসুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে ঢাকাসহ সমগ্র দেশে। কারণ একটা সময় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত। শুধু এটা নয়, এমন অসংখ্য গ্রাফিতি। সেখানে আছে ‘আমরাই বিকল্প’, ‘দফা ১ দাবি ১ শেখ হাসিনার পদত্যাগ’! একজন ছাত্রের মুখ চেপে ধরা পুলিশকে নিয়ে গ্রাফিতি, পুলিশ গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করছে—তাও গ্রাফিতি। রাজপথে গ্রাফিতি, গলিতে গ্রাফিতি, ফ্লাইওভার ও ওভারব্রিজের মেরুদণ্ডে গ্রাফিতি, সরকারি-বেসরকারি সব অফিস, বাড়ি কিংবা ভবনে গ্রাফিতি। ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে, ‘তুমি সমস্ত ফুল ছিঁড়ে ফেললেও বসন্তের আগমন ঠেকাতে পারবে না‘। দেয়ালে আরেকটি গ্রাফিতি ছিল এমন, সব ধর্মের বাঙালি সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে জানান দিচ্ছে, ‘হারতে নয়, জিততে শিখেছি’। একজন ছাত্রী পুলিশের তাক করা অস্ত্রের সামনে গোলাপ গুঁজে দিচ্ছে! এভাবেই বাংলাদেশ একটি গ্রাফিতির রাজ্য হয়ে দাঁড়ায়। অন্য অর্থে ভয়েস রেস করা, আন্দোলনকে বেগবান রাখা। যেখানে দেশের কোটি মানুষের চোখ সহজেই আটকাবে। এর ফলে সবাই শাণিত বা প্রাণিত হবে, যা হবে স্বৈরশাসকের জন্য সত্যিই দুর্বিষহ!
কার্টুন
বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্টুনের ইতিহাস শক্তপোক্ত পাতায় আঁকা তেমন একটা নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের ইতিহাস ভাষাকেন্দ্রিক। বায়ান্ন কেন্দ্রিক। ভাষার ওপর যখন পশ্চিম পাকিস্তান আক্রমণ করে, আক্রান্ত হয় পূর্ব পাকিস্তান। সে সময় উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম কার্টুনিস্ট কাজী আবুল কাশেমের (দোপেঁয়াজা) ‘হরফ খেদাও’ কার্টুনটি ভাষাপ্রাণ মানুষকে দারুণভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। বাংলার আরেক বিখ্যাত শিল্পী কামরুল হাসানের আঁকা ইয়াহিয়া খানের সেই বিখ্যাত ক্যারিকেচার ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’। গত শতকের শেষার্ধে অর্থাৎ নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচার এরশাদকে নিয়ে আঁকা স্কেচ ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’, যেটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্টুন দলিল, যা এখনো স্বৈরাচার খেদাও আন্দোলনে বাংলাদেশে এক আইকনিক। এই তালিকা ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ করেছেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কাইয়ুম চৌধুরীর মতো প্রতিভাবানরা। তবে কার্টুনকে পলিটিক্যাল ন্যারেশনে রূপান্তরে বিপ্লবের মতো ভূমিকায় ছিলেন শিশির ভট্টাচার্য্য! কার্টুন ন্যারেশন বন্ধ করতে ফ্যাসিস্ট সরকার কিশোরকে জেলে দেয়। শিল্পসত্তা কঠিন পরিস্থিতিতে আরো বেশি জ্বলে ওঠে। কার্টুনের অবস্থাও অনেকটা সে রকম। জুলাই চব্বিশে এসে সেই বাস্তবতা আরো বেশি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়েছে। কার্টুন পেয়েছে জনমানুষের ভাষা, কার্টুন পেয়েছে প্রতিবাদের ভাষা, কার্টুন হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের অন্যতম মাধ্যম!
জুলাই বিপ্লবে মেহেদি হকের আলোচিত একটি কার্টুন ছিল—রামদা হাতে হেলমেট পরিহিত ছাত্রলীগের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করছে শেখ হাসিনা। বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো মানুষ নেমে আসে রাজপথে। বুঝতে পারে স্বৈরশাসকের কঠোর অবস্থান। শিল্পীরাও বসে থাকেনি। রক্তমাখা হাতের শেখ হাসিনাকে কার্টুনে আঁকতে কারো কলমে জং ধরল না। কলম বা তুলি চলতে থাকল রকেটগতিতে। আঁকা হলো—পর্বতের মতো আবু সাঈদের দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা। বিপ্লব চক্রবর্তী দেখালেন, রক্তের নদীতে নৌকার বাইচ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা! ওই সময়ে এমন শত শত কার্টুন আঁকে আমাদের তরুণ কার্টুনযোদ্ধারা, সত্যিকার অর্থে যা ছিল উচ্ছ্বসিত জনতার দাবি কিংবা সময়ের যৌক্তিক ভাষা ও বয়ান। এই ন্যারেশন জাতিকে আরো বেশি উজ্জীবিত করেছে স্বৈরাচার খেদাও দাবিতে।
জুলাই বিপ্লবে পোস্টারের ভূমিকাও ছিল অনন্য। বিশেষ করে দেবাশিস চক্রবর্তীর বানানো ব্যতিক্রমী পোস্টারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ছিল সজাগ ও জীবন্ত। তাঁর ২২ জুলাইয়ের পোস্টারে ছাত্র-জনতার ঝাঁজালো মিছিলের ক্যাপশন ছিল, ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা/আজ জেগেছে এই জনতা’। ২৪ জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-ছাত্রীর ছবিতে ক্যাপশন হিসেবে লেখেন, ‘খুনি হাসিনার কত দম/দেখে নেবে জনগণ’। একই পরম্পরায় ২৬ জুলাই দেবাশিস নিজের ওয়ালে পোস্ট করেন—শেখ হাসিনার চোখ দুটি কালো করে, ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘শেখ হাসিনার অনেক গুণ/পুলিশ দিয়ে করছে খুন’, যা সেসময় বেশ লাইক, শেয়ার হয়। এর পরও আমরা অসংখ্য পোস্টার দেখি। বিপ্লব বা অভ্যুত্থান শুধু যে রক্ত দেয় তা নয়, বিপ্লব কিছু শিল্প, কিছু নান্দনিকতা দেয়, প্রতিবাদের ভাষা দেয়, অসীম সাহস আর শক্তিও দেয়। তবে নান্দনিকতাই চূড়ান্ত।
বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া লড়াই-সংগ্রাম, বিপ্লব ও অভ্যুত্থানের মুহূর্তগুলো রাজপথ ও রাজনীতির ময়দানে ম্রিয়মাণ থাকলেও জ্বলন্ত বৃষ্টির মতো স্লোগান, বজ্রপাতের মতো কাব্যিক লাইন, রক্তে আগুনের ঢেউ তোলা গ্রাফিতি, পোস্টার, কার্টুনগুলোই আমাদের নস্টালজিক লড়াইয়ের মাঠে নিয়ে যায়। স্বৈরশাসকদের প্রতি ঘৃণার দুয়ার উন্মুক্ত করে। আমরা দেখতে পাই নব্বইয়ের স্বৈরশাসক এরশাদকে নিয়ে আঁকা ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’। তখন আমরাও মুক্তির পয়গাম হাতে জুলাই ২০২৪-এ এসে বলতে থাকি, ‘Step down Hasina’, ‘এত লাশ লইয়া কোথায়
যামু...’।